আ’লীগের জেলা সভাপতির সাথে ছাত্রলীগ নেত্রীর পরকীয়া সম্পর্ক, অতঃপর… (ভিডিও সহ)

আসলে আমরা মেয়েরা কারও কাছে নিরাপদ নয়। মনে করেছিলাম এই বয়স্ক লোকটার কাছে আমি নিরাপদ থাকব কিন্তু তিনিও আমাকে ভোগের সামগ্রী বানালেন। সাংবাদিকদের কাছে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এসব কথা বলেছেন ছাত্রলীগের এক নেত্রী।

তিনি স্ত্রীর মর্যাদা চাইতে গিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার মো. শাহ আলম ও তার স্ত্রীর হাতে নির্যাতিত হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই ছাত্রলীগ নেত্রী। বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি জেলা পরিষদে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী ওই তরুণী সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাইব্রেরি সায়েন্সে মাস্টার্স শেষ করে ঝালকাঠির আকলিমা মোয়াজ্জেম হোসেন ডিগ্রি কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি বর্তমানে ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই ছাত্রলীগ নেত্রী জানান, ঝালকাঠি জেলা পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করার সুবাদে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার মো. শাহ আলমের (৭২) সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

তার অভিযোগ সরদার মো. শাহ আলম গত তিন বছর ধরে তাকে স্ত্রীর মতো ব্যবহার করলেও তিনি তাকে আইনগতভাবে স্ত্রীর মর্যাদা দেননি। গত কয়েক দিন ধরে তাকে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দেয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল।

বুধবার দুপর ১২টায় তিনি জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান সরদার শাহ আলমের কক্ষে অবস্থান নিয়ে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে। কপর্যায়ে খবর পেয়ে বিকাল ৩টার দিকে জেলা পরিষদে হাজির হন সরদার শাহ আলমের স্ত্রী ও জেলা মহিলা পরিষদের সভানেত্রী শাহানা আলম।

তিনি সরদার শাহ আলমের কক্ষে ঢুকেই ওই ছাত্রলীগ নেত্রীকে দেখে তার ওপর চড়াও হয়ে চড়-থাপ্পড় মারেন। একপর্যায়ে তাকে মারতে মারতে রুম থেকে বের করে দেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন ও সাংবাদিকরা উপস্থিত হয়। এতে শাহ আলম ও শাহানা আলম গাড়িতে উঠে জেলা পরিষদ ত্যাগ করতে চাইলে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রলীগ নেত্রী জোরপূর্বক তাদের গাড়িতে উঠতে চায়।

তারা তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলে তিনি জেলা পরিষদের দ্বিতীয় তলার ছাদে উঠে সেখান থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। স্থানীয় কিছু যুবক ও কয়েকজন যুবলীগ নেতা ওই ছাত্রলীগ নেত্রীকে ধরে ফেলেন এবং তাকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

সদর হাসপাতালের কেবিনে চিকিৎসাধীন ছাত্রলীগ নেত্রী বলেন, মনে করেছিলাম এই বয়স্ক লোকটার কাছে আমি নিরাপদ থাকব কিন্তু তিনিও আমাকে ভোগের সামগ্রী বানালেন। সরদার শাহ আলমের স্ত্রীর মর্যাদা পাওয়ার জন্য আমি প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেব।

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মেহেদী হাসান সাগর বলেন, চড়-থাপ্পড়ের কারণে সাধারণ জখম নিয়ে হাসপাতালে আসে। এ ব্যাপারে সরদার মো. শাহ আলমের বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার তার নম্বরে কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।